রবিবার ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

রবিবার ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

চাঁদ নিয়ে পরাশক্তিগুলোর যুদ্ধ : কে কাকে টেক্কা দিচ্ছে ?

সোমবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
48 ভিউ
চাঁদ নিয়ে পরাশক্তিগুলোর যুদ্ধ : কে কাকে টেক্কা দিচ্ছে ?

কক্সবংলা ডটকম :: পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ চাঁদকে নিয়ে মানুষের আগ্রহের শেষ নেই। চাঁদকে শুধু পৃথিবীর মাটি থেকে দেখেই মানুষ থেমে থাকেনি। যন্ত্র তৈরি করে, প্রযুক্তি, বিজ্ঞানের সাহায্যে তার মাটিতে পা রেখে এসেছে।

৫৪ বছর আগে ১৯৬৯ সালে চাঁদের বুকে মানুষের পা পড়ে। সুনির্দিষ্টভাবে বললে মার্কিনিদের পা পড়ে। চাঁদের আর্থিক গুরুত্ব কম বলে এরপর আর কোনো দেশ তেমন কোনো অভিযানের পরিকল্পনা করেনি। সম্প্রতি চন্দ্রবুকে আবারও মানুষের পায়ের ছাপ ফেলার উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কোন দেশের মানুষের পায়ের ছাপ পড়বে চাঁদের মাটিতে।

পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ চাঁদে মানুষ পাঠানো থেকে শুরু করে একাধিক অভিযান, অনুসন্ধান ক্রমাগত চালিয়ে গিয়েছেন পৃথিবীর বিজ্ঞানীরা। এ ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছে আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা।

মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে আমেরিকা বরাবরই অন্যান্য দেশের তুলনায় এগিয়ে। চাঁদ নিয়েও বহু গবেষণা, পরীক্ষানিরীক্ষা করেছে নাসা। তাদের মাধ্যমে চাঁদের অজানা তথ্য জানতে পেরেছে বিশ্ববাসী।

বলা চলে, এত দিন মহাকাশ গবেষণায় নাসার একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল। প্রযুক্তি, বিজ্ঞান, পরিকাঠামো, সব দিক থেকেই বিশ্বের অন্য সমস্ত মহাকাশ গবেষণা সংস্থাকে পিছনে ফেলে দিয়েছিল আমেরিকা।

মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে একসময় অবশ্য নাসার সঙ্গে সমানে সমানে পাল্লা দিয়েছে সোভিয়েত ইউনিয়ন। তবে রাশিয়ার সেই দাপট এখন আর নেই। তবে ২০২৩ সালের আগস্টে মাসে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে মহাকাশযান লুনা-২৫ পাঠানোর চেষ্টা করেছিল রাশিয়া। তবে তা ব্যর্থ হয়েছে। অন্যদিকে ২০২৩ সালের ২৩শে আগস্ট বিশ্বের প্রথম দেশ হিসাবে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে ভারতের চন্দ্রযান-৩ সফলভাবে অবতরণ করে।

এরপর ২০২৪ সালে জাপানের মহাকাশযান স্লিম মিশন চাঁদের নিরক্ষীয় অঞ্চলে উল্টোভাবে অবতরণ করলেও কাজ করতে পারেনি। ২০২৪ সালে নাসা চাঁদে বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে দুটি রোবটিক মিশন পরিচালনা করতে গিয়ে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। এরমধ্যে ২০২৪ সালের ১৮ জানুয়ারীতে মার্কিন কোম্পানি অ্যাস্ট্রোবটিক টেকনোলজি পেরিগ্রিন মিশন–১ চাঁদে রওনা হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ব্যর্থ হয়।এরপর ২৪ ফেব্রুয়ারী চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে নোভা সি ল্যান্ডার কাত হয়ে অবতরণ করলেও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

তবে ৫২ বছর পর ২০২৪ সালে দুটি অভিযান ব্যর্থ হলেও চাঁদে মিশন পরিচালনায় সবার ওপরে এখনো যুক্তরাষ্ট্রই। যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্র দেশগুলো আর্টেমিস ২ ও আর্টেমিস ৩ মিশনের মাধ্যমে আবারও চাঁদে মানুষ পাঠানোর পরিকল্পনা করছে।

এদিকে নতুন করে মহাকাশ অন্বেষণের ঘোষণা দিয়েছে ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সি (ইএসএ)। ২২টি ইউরোপীয় দেশ সর্বসম্মতভাবে ইএসএর তহবিল জোগাচ্ছে। মহাকাশ গবেষণা সংস্থাটি ২০২৮ সালের মধ্যে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন থেকে পৃথিবীতে কার্গো খেয়া পরিচালনার কাজ শুরু করছে। প্রথমবারের মতো ইউরোপের কোনো সংস্থা নভোচারী পরিবহনের যান তৈরির পরিকল্পনা করছে। প্রাথমিকভাবে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন থেকে নভোচারী বহনের জন্য ব্যবহার করা হবে সেই কার্গো খেয়াযান।

গত শতকের পাঁচ ও ছয়ের দশক জুড়ে মহাকাশে সোভিয়েত (আজকের রাশিয়া) ও আমেরিকার (US) রীতিমতো শেয়ানে শেয়ানে টক্করের কথা সকলের জানা। তারপর এতগুলি দশক ধরে কার্যত রাজত্ব করছে NASA। কিন্তু এবার সেই একচ্ছত্রাধিপত্যে ভাগ বসাতে হাজির হয়ে গিয়েছে চিন (China)। আর তাই মহাকাশে মৌরসিপাট্টা বজায় রাখা নিয়ে রীতিমতো শঙ্কিত নাসা।

তবে চাঁদে অভিযানের ব্যাপারে আমেরিকাকে কঠিন প্রতিযোগিতার মধ্যে ফেলে দিয়েছে চিন। গত কয়েক বছরে তারাও মহাকাশ গবেষণায় প্রভূত উন্নতি করেছে।

২০০৭ সালে চাঁদের উদ্দেশে একটি মহাকাশযান পাঠিয়েছিল চিন। সেটি চাঁদকে প্রদক্ষিণ করে। ২০১০ সালে একই রকমের আরও একটি মহাকাশযান চাঁদে পাঠায় চিন।

চিনের চাঁদ কেন্দ্রিক মহাকাশ অভিযানগুলি ‘চ্যাং’ সিরিজের অন্তর্গত। ২০১৩ সালে চাঁদে প্রথম মহাকাশযান অবতরণ করায় চিন। সেই অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছিল চ্যাং-৩।

আমেরিকা এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের পর তৃতীয় দেশ হিসাবে চাঁদে মহাকাশযান পাঠিয়েছে চিন। এই কৃতিত্বের তালিকায় চতুর্থ ভারত। ২০২৩ সালে ভারতের চন্দ্রযান-৩ চাঁদের মাটিতে পা রেখেছে।

১৯৬৯ সালে চাঁদে প্রথম মহাকাশচারী পাঠিয়েছিল আমেরিকা। অ্যাপোলো অভিযান সফল হওয়ার পর থেকে চাঁদ নিয়ে সাধারণ মানুষের আগ্রহ কয়েক গুণ বেড়ে যায়। চাঁদে আবার মানুষ পাঠানো, সেখানে মহাকাশচারীদের ঘাঁটি তৈরি করা এখন বিজ্ঞানীদের অন্যতম লক্ষ্য।

এই ক্ষেত্রেই আমেরিকার নাসাকে টপকে যেতে পারে চিনের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা সিএনএসএ (চিন ন্যাশনাল স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন)। একটি সূত্রের দাবি, আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থা মহাকাশে চিনের বাড়বাড়ন্ত নিয়ে প্রকাশ্যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

চিনা সংস্থা জানিয়েছে, আগামী দিনে চাঁদে মহাকাশচারী পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। এ ছাড়া, চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে একটি স্থায়ী গবেষণা ঘাঁটিও তৈরি করবে তারা। চিনের দাবি, এ সব হয়ে যাবে চলতি দশকের মধ্যেই।

চিনের অগ্রগতি দেখে বিস্মিত আমেরিকার গোয়েন্দারাও। তাঁরা নাকি প্রকাশ্যেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, চিন যে ভাবে দ্রুততার সঙ্গে চাঁদের অভিযানে এগিয়ে চলেছে, তাতে আগামী দিনে তারা ছাপিয়ে যেতে পারে নাসাকেও।

এই সূত্রে নাসার সাম্প্রতিক কিছু প্রতিবন্ধকতার কথা উঠে এসেছে। ঘোষিত অভিযানের শেষ দিন আরও খানিক পিছিয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছে আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা।

চাঁদে আবার মানুষ পাঠানোর তোড়জোড় শুরু করেছে নাসা। তারা জানিয়েছিল, আর্টেমিস-৩ অভিযানে ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে চাঁদের মাটিতে আবার পা রাখবেন মহাকাশচারীরা।

কিন্তু সম্প্রতি নতুন ঘোষণায় নাসা জানিয়েছে, চাঁদে মানুষ পাঠাতে আরও কিছুটা দেরি হতে পারে। ২০২৫-এর পরিবর্তে ২০২৬ সাল পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। চাঁদে স্থায়ী ঘাঁটি তৈরি করতে আমেরিকার সময় লাগতে পারে ২০৩৫ সাল পর্যন্ত। এত দিন ২০৩০-এর মধ্যেই তা করার কথা বলেছিল নাসা।

আমেরিকাকে টেক্কা দেওয়ার ক্ষেত্রে মহাকাশ গবেষণাকে গুরুত্বপূর্ণ ‘অস্ত্র’ বলে মনে করে চিন। এই একটি বিষয়ে তাদের ধারাবাহিক অগ্রগতি তাই আমেরিকার চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মহাকাশের ইঁদুরদৌড়ে শেষ হাসি কে হাসবে, সেটাই এখন দেখার।

নাসা বস নেলসন স্বীকার করেছেন, আবারও নতুন করে মহাকাশ নিয়ে বিশ্বের পরাশক্তিগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। তবে তার মতে, এবার আমেরিকার মূল প্রতিদ্বন্দ্বী রাশিয়া নয়, বরং চীন।

নেলসন চান না চীন আমেরিকার আগে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে গিয়ে পৌঁছুক। তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যু্দ্ধ চলমান থাকলেও নেলসন রাশিয়ার মিশনের প্রতি শুভকামনা জানিয়েছেন।

২০২৪ সালে নাসা চাঁদে আরও কয়েকটি রোবটিক মিশনও পরিচালনা করতে চায়। আর্টেমিস মিশনের মাধ্যমে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে প্রথমবারের মতো মানুষ ক্যাম্প তৈরি করবে। এসব ক্যাম্প থেকে নভোচারীরা বিশেষভাবে তৈরি গাড়িতে চড়ে চাঁদের পরিবেশ পর্যবেক্ষণ করবেন।

আর্টেমিস মিশন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি-বেসরকারি মহাকাশ অভিযান প্রকল্পের সূচনা তৈরি করবে। এ দশকেই এ ধরনের বিভিন্ন যৌথ প্রকল্প হাতে নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে দেশটির।

48 ভিউ

Posted ১:৫৯ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com